আমার বন্ধু আসছে বিদেশ থিকা সাড়ে তিন বছর পর। আওনের পর আমারে কল দিয়া কয় আজকা পয়লা ফাল্গুন তর লগে ঘুরতে যামু। আমি কইলাম উত্তম প্রস্তাব দেখি অফিসে ট্রাই করি। তারপরে একটা মিটিঙে চইলা গেলাম বসের পিছে পিছে। সেলসের লগে মিটিঙে গেলে যা হয় একটা কথা দশবার কইরা বুঝাইতে হয় আর ২ ঘন্টার মিটিঙ ৫ ঘন্টায়ও আর শেষ হয়না। বন্ধু ১৫/২০ মিনিট পর পর ফোন দেয় আর কাউঠা গলায় জিগায় তুই কই। কই মিটিঙে আর সে আচ্ছা বইলা খটাস কইরা ফোন রাইখা দেয়। মিটিঙ শেষে আমি বান্ধবীর সাথে ঘুরতে চলে গেলাম ফোন বন্ধ করে।
তারপর আর ৭ দিন অর ফোন ধরিনা। হেয় অন্য নাম্বার থিকা কল দিয়া কয় তুই কি আমার উপর কোনো কারণে রাগ? ফোন ধরস না ক্যান? বিরক্ত হয়ে আরও ৫দিন ফোন ধরিনা।
তারপর ভাবি বেচারা চলে যাবে। দেখাটা করা উচিৎ। আসলে মনে ভাবি বিদেশ থেকে যেইসব লোভনীয় ইম্পোর্টেড জিনিস আনসে সেইগুলা কালেক্ট করা দরকার। ভেবে তারে ফোন দিয়ে বেইলি রোড আসতে বলি। জ্যামে আটকে যেয়ে ৩০ মিনিট দেরিতে পৌঁছাই।
আমার বন্ধু কেএফসি যাইতে চায় কিন্তু আমি ফকিরা মানুষ বন্ধুবান্ধব নিয়া দীর্ঘদিন ধইরা সস্তার বিএফসিতে আড্ডা দিয়া অভ্যাস তাই আমি বিএফসিতে ঢুকি। আত্মবিশ্বাসে যে বন্ধুর তো ভাদাইম্যা অবস্থায় দীর্ঘদিন ঢাকার অজায়গায় কুজায়গায় খায়া অভ্যাস আছে। হেয় অর্ডার দিতে গিয়া বলে চিকেন ফ্রাই বাদে যেকোনো কিছু খাইবে। সে coleslaw অর্ডার করে। আমি তার জুতার দিকে তাকায়ে জিগাই তার বাসার এলাকাতে আজকে রাস্তায় পানি উঠসে কিনা। সে বলে সে ৪জোড়া জুতা আনসে ৪জোড়াই লেটেস্ট ফ্যাশানের। বাংলাদেশ ফ্যাশনের দিকে এতো পিছায়ে থাকবে সে মনেহয় ভাবেনাই।
জুতা |
তারপর সে কইতে থাকে ঢাকা এমন ফালতু জা'গা এইখানে ৭দিন থাকার পর করার কিছু নাই দেখার কিছু নাই এইখানে সব দোকানের খাওন একরকম জামা কাপড় একরকম এইখানে কোনো হট মাইয়া নাই। আমি কই হ। আর অনেক ধুলাবালি, আর নোংরা, আর জ্যাম। কয় হ, তুই প্লিজ লন্ডন চইলা আয়। তারপর ধুলাবালি নোংরা জ্যাম আর নয়েজ নিয়া আমরা কথা বলি। কোলস্লো আসলে কয় সে এইটা খাবেনা এইটার চেহারা এতো খারাপ একবার দেইখা ফালানের পর চোখ বন্ধ কইরাও খাওনের উপায় নাই। আমরা সফট আইসক্রিম হাতে নিয়া দোকানদারদেরকে প্রচুর ধন্যবাদ দিয়া বাইর হয়ে আসি। বন্ধু আমারে জিগায় তুই এখন ব্যাতন কতো পাস। আমি কইতে অস্বীকৃতি জানাইলে সে একবার কয় তুই এতো ফর্মাল হইসোস ক্যান, বন্ধুবান্ধবরে ব্যাতন কইতে অসুবিধা কী ইত্যাদি। আর রাস্তার লোকের গায়ে গা লাগলেই তারে ধইরা সরি কয়। লোকজন তার সরির একসেন্টে চমৎকৃত হয়। কথাবার্তা জমেনা বলে সে আমার সাথে মারামারি খেলার চেষ্টা করে। আমি চুপচাপ মুখ করে থাকি তাই রাস্তার পাশের চায়ের দোকানের ঘ্রাণ আসে নাকে। বাসায় এসে বন্ধুর নাম্বার ব্লক করি। আমারে অনেক বছর ধইরা চিনতো এমন আরেকটা লোক মাইনাস খাইলো।
9 comments:
বেচারা... :))
তবে ঢাকার ধুলার প্রেমে কেউ না পড়লে তাকে দোষ দেয়া উচিত হবেনা। তোমার বন্ধু কবছর আছে লন্ডনে? এতোটা বদলে যাওয়ার জন্য অন্তত বছর তিরিশেক থাকা লাগে...
বেচারা আমি। বন্ধু লন্ডনে গেসে ৩ বছরের বেশি হইলো।
তুমারেউ মাইনাচ। এতো সুন্দর একটা জায়গাতে থাকো কেনু কেনু কেনু :@
বিদেশে যাইতে এবং বড় জুতা কিন্তে মন্চায়।
রাইতে বালিশের কাজ, দিনে জুতা হিসাবে কাজে লাগবো। ২ ইন ১
এখন যে মন্তব্যটা করবো এক্কেবারে অপ্রাসঙ্গিক। হঠাৎ কেন জানি একটা গানের লাইন মাথার মধ্যে ঘুরতেসে-
ছায়াছন্দ...ছায়াছন্দ...ছা-য়া-ছ-ন্দ...ছা-য়া-ছ-ন্দ...
@থিও, লান্-ডান্ যেতে চাই
বড়ো জুতা নিতে চাই
@বনিক, এইখানে অফটপিক কমেন্ট এলাউ করা হয়না :@
খ্যাক খ্যাক।
বৈদেশ না গেলে মাইনষের দাম বাড়ে না। :-D
আমি বৈদেশ যাইতে চাই।
ইরুপ যামুগা B-P
আমি দেখা করতে চাইলে এমুন করিস না প্লিজ লাগে :(
ছয় বছর এইখানে থাইকাও খ্যাত বাঙালিই আছি সেই ব্যাপারে তুই নিশ্চিত থাক।
লল্লল্লল
Post a Comment