May 16, 2011

মুড সুইং

ফেইসবুক স্ট্যাটাসঃ 
মেঘগুলি মেঘ মেঘ/ ঘাসগুলি জোছ-না/ জোনাকিরা মিউজিক/ ট্রেন চলে ঝিক ঝিক/ খালগুলি রেললাইন/ গাছগুলি ল্যাম্পপোস্ট/ মাধবীরা চুপচাপ/ ফুটে ফুটে মরে যায়/ সাপগুলি খেলা করে/ ছায়াঢাকা পাহাড়ে/ বৃষ্টিটা আসলেই/ নৌকাটা ভাসবে/ জানালাটা তবু ঠিক/ বন্ধই থাকবে

ক্লিশে কবিতাঃ
বৃষ্টি হয়েছিল পথে সেদিন অনন্ত মধ্যরাতে
বাসা ভেঙে গিয়েছিল, গাছগুলি পেয়েছিল হাওয়া
সুপুরিডানার শীর্ষে রূপোলি জলের প্রভা ছিল

আর ছিল অন্ধকারে – হৃদয়রহিত অন্ধকারে 
মাটিতে শোয়ানো নৌকো, বৃষ্টি জমে ছিল তার বুকে 
ভেজা বাকলের শ্বাস শূন্যের ভিতরে স্তব্ধ ছিল

ফেইসবুক কমেন্টঃ
বরিশালে খুব সুপুরি গাছ। সুপুরি গাছের সারি দেখলেই মনেহয় আমি বাড়ি চলে গেছি। বা মামাবাড়ি। সুপুরির ঝরে পড়া কুঁড়ি খাইতে খুব মজা। কিন্তু বৃষ্টির কথা বললে আমার মনে পড়ে জামরুল গাছের কথা। সাদা পাপড়ি, নরোম রোঁয়া, সিক্ত গন্ধ। সিক্ত বললে আমার মনে হয় শিশির। শিশির বললে আমার মনেহয় শিউলি। ভোরবেলা আমি ঝুড়ি নিয়ে যাই শিউলি ফুল তুলতে। ডাল ধরে টান দিতে সারারাতের জমা শিশির ঝরঝর করে ঝরে আমাকে পুরোই ভিজিয়ে দেয়, সিক্ত করে। তার সাথে আসে শীত। কুয়াশা, তুষের আগুন, উষ্ণতা, বিছানায় আশ্রয় নেওয়া বিড়ালের বাচ্ছা। বিছানার পাশে জানালা, জানালার বাইরে হাসনাহেনার গন্ধ। অনেক বড়ো চাঁদ। চাঁদ কখনওই কারো পিছু ছাড়েনা। যে কোনো জায়গা থেকে যেকোনোখানে নিয়ে যায়। চাঁদ যেনো কলাতলীর বিস্তৃত বালির সৈকত। তুমি হাঁটতে হাঁটতে সাগরের কতো ভিতরে চলে গেছো তা দেখে হঠাৎ বিস্মিত হবে। তখন তোমার খুব শীত করবে কিন্তু কোনো আগুন থাকবেনা। আর সমুদ্রের শব্দের মধ্যে কোনো কথা থাকবেনা তাই তুমি খুব একা হয়ে যাবে। তখন তুমি কুকড়ে মুকড়ে হয়ে যেতে চাইবে ছোটো শিশু, এতো ছোটো যে নাইটকোচে মায়ের কোলে লম্বা হয়ে ঘুমুতে পারবে। এই জ্ঞান নিয়ে যে ভোরবেলা ঘুম ভেঙে বাইরে দেখবে নতুন শহর। কিন্তু ততোদিনে তোমার মা মরে গেছে আর যদিও তুমি একজন কনফিডেন্ট বড়োমানুষ আসলে তুমি এতিম। তোমার ছেলেবেলার যে পুকুরের জল বেগুনি হয়ে থাকতো জারুল ফুলে আর আর শীতল হয়ে থাকতো পুরানো আমলকির ছায়াতে, সেখানে এখন আর কেউ থাকেনা। বড়োমানুষদের লেখা সব গানে আসলে এইসব কথাই লেখা থাকে।