আজিজ গিয়ে আজকে দুইটা কবিতার বই কিনতে চাইলাম। বইয়ের দোকানদার ডেঁপো ছেলেটি, দাম আমার থেকে না নিয়ে নিলো টুটুল ভাইয়ের কাছে থেকে। সে আমাকে গত দুই তিন বছরে যতো কবিতার বই কিনে দিয়েছে, তার যে'কটি পাতা আমি পড়েছি, তা দেখলে নির্ঘাত আমাকে মাইর দিয়া ভর্তা করবে। আমার মনে হয় কবিতার গ্রন্থ বিক্রি না করে কার্ডের মতো করে কবিতা বিক্রি করা দরকার। একটা কবিতা সম্বলিত একটা কার্ড ৫টাকা। আমি কিছুতেই এক সিটিংয়ে দুইতিনটার বেশি কবিতা পড়তে পারিনা। দেখা যায় অনেক পাতা উল্টায় উল্টায় হঠাত কোনো পাতায় একটা লেখা ভালো লাগলো ওইটা পড়লাম। তারপর আর কোনোটা পড়া হইলোনা। পরে আবার ওই বইটা বের করলে সেই আগের পছন্দ হওয়া কবিতাটাই পড়ি। আজকের একটা বইয়ের কয়েকটা লেখাই পড়া হয়ে গেলো। একটা তুলে দিচ্ছি।
১৮
ঘুম আর মোমিনপুরের মাঝামাঝি একটুকরো বারান্দা রয়েছে।
দুধ আর চা-পাতা রয়েছে- কেউ কেটলিটা বসিয়ে দেবে কি?
ফুটন্ত জলের শব্দে উঠে পড়ব- মানুষজনের গানে-
কাগজের নৌকাগুলি এইদিকে ভেসে আসছে;
কোনো এক বিখ্যাত লোকের মৃত্যুদিন আজ।
আরেকটা দিই।
৪৮
বৃষ্টি নামল আর আমিও এক আশ্চর্য সত্যকে আবিষ্কার করলুম-
দেখলুম, এই লাইনটানা পাতার উপর বড় বড় ফোঁটায় জল ঝরছে,
গত মাসের মুদির হিসেবের সঙ্গে আমার ছোট ছেলের ক্লাস-পরীক্ষার নম্বর
বেমালুম মিশে গেল, পাটনা যাতায়াতের ট্রেনভাড়ার অঙ্ক কালো
সুতোর রেখায় ভেসে চলেছে, গৌতমের টেলিফোন নম্বর আর কি কেউ
পড়তে পারবে, ও-টি এখন এক নীল পুষ্করিণী, আমার অবচেতন
মন যা যা চেয়েছিল তার প্রতিটি রহস্য দেখছি এই গ্রীষ্মশেষের
বৃষ্টি কোনও এক কৌশলে জেনে ফেলেছে। সে এর চেয়ে বেশি কিছু
জানে কিনা ভাবতেও ভয় হয়।
এটি উৎপলকুমার বসুর কবিতা সংগ্রহ।
অন্য বইটা নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কবিতার ক্লাস। খুব নাম শুনেছি। আজকে দেখতে পেয়ে নিয়ে নিলাম।
No comments:
Post a Comment