অনেকদিন লেখা হয়না। কারন অনেক।
প্রথমত, আমার খাতা কলম কিছু নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বছরের শেষ দিনগুলো কাটছে খাতা কলমের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সারাদিন কম্পিউটার মনিটরের সামনে। ব্রাউজারে দশটা ট্যাব খুলে রেখে আমি বাংলা লিখতে পারিনা।
দ্বিতীয়ত, জনসংযোগে ইদানিং অনেক বেশি ব্যাস্ত হয়ে গেছি। একান্ত নিজের জন্য সময় থাকছেনা।
জীবনের বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সর্বগ্রাসী শুন্যতার দিকে যখন তাকাই, এতো আতঙ্ক হয়! বেশি বেশি জনসংযোগের এটাই কারণ। সংযোগের মাধ্যম মূলত এমএসএন মেসেঞ্জার, ফেইসবুক, আর টেলিফোন। ভার্চুয়াল সবগুলোই। এই করে করে বাস্তব জীবনের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি। মনে করতে পারিনা আমি আসলে কেমন। কোনো লেখা তৈরি হয়ে ওঠার জন্য যে অবসরটুকু প্রয়োজন, তা নিজেকে দেওয়া হয়ে ওঠেনা।
তৃতীয়ত, হতাশা। যেরকম ঝরঝরে ছিমছাম গদ্য লিখতে চাই, তা কিছুতেই ধরা দেয় না।
অদ্ভুত দ্বিধা দ্বন্দ্ব কষ্টের ভেতর দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে সময়। পরিবর্তনের অদ্ভুত এক আবহাওয়া অনুভব করছি। এ কি সত্য, না আমার মনের ভুল? পরিবর্তনের একটা ঝড় এসে আমাকে যেন উপড়ে নিয়ে যেতে চাইছে।
আজকে যদি এই ঝড়ের সাথে চলে যাই, উপড়ে যাবে আমার শিকড়, মৃত্যু হবে বর্তমান আমি-র।
যেই মানুষটা আমাকে পথের মধ্যে ফেলে চলে গেলো, তার যেই অজাত সন্তানগুলিকে এতো বছর বুকে আগলে রাখলাম পরম মমতায়, মা হয়ে কেমন করে আমিও আজকে তাদের পথের মাঝে ফেলে চলে যাই? তারা যে আমারই মুখের দিকে সবসময় তাকিয়ে থাকে। কেমন করে আমি মৃত্যুর বিনিময়ে সুখ কিনতে পারি? কিংবা পুনর্জন্ম কি আসলেই সম্ভব? নিজেকে খুন করে কোনো মানুষ সুখী হতে পারে? আর বর্তমানকে ত্যাগ করলেই যে সুখ ধরা যাবে, তারই বা নিশ্চয়তা কী? কে বলতে পারে, ভবিষ্যত নিয়ে আসবে না নতুন বেদনা, নতুন হতাশা? নতুন বেদনা ধারণ করার ক্ষমতা আর আমার নেই।
তবু আমার আজকাল মাঝে মাঝে স্বার্থপর হতে খুব ইচ্ছে করে। নিজেদের একটা নির্ভার বিকেল পেতে ভয়ঙ্কর লোভ হয়। আবারও তরুণ হতে ইচ্ছে করে।
লিখতে লিখতে উপলব্ধি করলাম, আমার শিকড়ের সাথে আমি কতো অচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছি। এর থেকে ছিন্ন হওয়া আমার পক্ষে কতোটা অসম্ভব। তবু, আজকাল মাঝে মাঝে, আমার খুব সুখী হতে ইচ্ছে করে।
প্রথমত, আমার খাতা কলম কিছু নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বছরের শেষ দিনগুলো কাটছে খাতা কলমের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সারাদিন কম্পিউটার মনিটরের সামনে। ব্রাউজারে দশটা ট্যাব খুলে রেখে আমি বাংলা লিখতে পারিনা।
দ্বিতীয়ত, জনসংযোগে ইদানিং অনেক বেশি ব্যাস্ত হয়ে গেছি। একান্ত নিজের জন্য সময় থাকছেনা।
জীবনের বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সর্বগ্রাসী শুন্যতার দিকে যখন তাকাই, এতো আতঙ্ক হয়! বেশি বেশি জনসংযোগের এটাই কারণ। সংযোগের মাধ্যম মূলত এমএসএন মেসেঞ্জার, ফেইসবুক, আর টেলিফোন। ভার্চুয়াল সবগুলোই। এই করে করে বাস্তব জীবনের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি। মনে করতে পারিনা আমি আসলে কেমন। কোনো লেখা তৈরি হয়ে ওঠার জন্য যে অবসরটুকু প্রয়োজন, তা নিজেকে দেওয়া হয়ে ওঠেনা।
তৃতীয়ত, হতাশা। যেরকম ঝরঝরে ছিমছাম গদ্য লিখতে চাই, তা কিছুতেই ধরা দেয় না।
অদ্ভুত দ্বিধা দ্বন্দ্ব কষ্টের ভেতর দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে সময়। পরিবর্তনের অদ্ভুত এক আবহাওয়া অনুভব করছি। এ কি সত্য, না আমার মনের ভুল? পরিবর্তনের একটা ঝড় এসে আমাকে যেন উপড়ে নিয়ে যেতে চাইছে।
আজকে যদি এই ঝড়ের সাথে চলে যাই, উপড়ে যাবে আমার শিকড়, মৃত্যু হবে বর্তমান আমি-র।
যেই মানুষটা আমাকে পথের মধ্যে ফেলে চলে গেলো, তার যেই অজাত সন্তানগুলিকে এতো বছর বুকে আগলে রাখলাম পরম মমতায়, মা হয়ে কেমন করে আমিও আজকে তাদের পথের মাঝে ফেলে চলে যাই? তারা যে আমারই মুখের দিকে সবসময় তাকিয়ে থাকে। কেমন করে আমি মৃত্যুর বিনিময়ে সুখ কিনতে পারি? কিংবা পুনর্জন্ম কি আসলেই সম্ভব? নিজেকে খুন করে কোনো মানুষ সুখী হতে পারে? আর বর্তমানকে ত্যাগ করলেই যে সুখ ধরা যাবে, তারই বা নিশ্চয়তা কী? কে বলতে পারে, ভবিষ্যত নিয়ে আসবে না নতুন বেদনা, নতুন হতাশা? নতুন বেদনা ধারণ করার ক্ষমতা আর আমার নেই।
তবু আমার আজকাল মাঝে মাঝে স্বার্থপর হতে খুব ইচ্ছে করে। নিজেদের একটা নির্ভার বিকেল পেতে ভয়ঙ্কর লোভ হয়। আবারও তরুণ হতে ইচ্ছে করে।
লিখতে লিখতে উপলব্ধি করলাম, আমার শিকড়ের সাথে আমি কতো অচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছি। এর থেকে ছিন্ন হওয়া আমার পক্ষে কতোটা অসম্ভব। তবু, আজকাল মাঝে মাঝে, আমার খুব সুখী হতে ইচ্ছে করে।
10 comments:
এক ধাক্কায় লেখাটা শেষ করে ফেলে যখন চোখ বুলাচ্ছি, খেয়াল করলাম, প্রতিটি স্তবকেই বিচ্ছিন্ন, কিংবা বিচ্ছিন্নতা কথাটা বার বার চলে এসেছে। মজা লাগলো।
যা কিছু নতুন, তা সবই একদিন পুরনো হয়, সময়ের ধুলি জমে সেই নতুনও একদিন ভারী হয়ে ওঠে। তাহলে জীবনের কোন আনন্দ সত্য, আর কোন সময়টুকু আমরা সত্যি করে বাঁচি, তা আমি এখনও জানিনা। এটা জানতে জানতেই কি জীবন শেষ হয়ে যাবে? কিংবা না জেনেই?
"যেই মানুষটা আমাকে পথের মধ্যে ফেলে চলে গেলো, তার যেই অজাত সন্তানগুলিকে এতো বছর বুকে আগলে রাখলাম পরম মমতায়, মা হয়ে কেমন করে আমিও আজ তাদের পথের মাঝে ফেলে চলে যাই? তারা যে আমারই মুখের দিকে সবসময় তাকিয়ে থাকে। কেমন করে আমি আরেকজন মানুষের মৃত্যুর বিনিময়ে সুখ কিনতে পারি? কিংবা পুনর্জন্ম কি আসলেই সম্ভব? নিজেকে খুন করে কোনো মানুষ সুখী হতে পারে? আর বর্তমানকে ত্যাগ করলেই যে সুখ ধরা যাবে, তারই বা নিশ্চয়তা কী? কে বলতে পারে, ভবিষ্যত নিয়ে আসবে না নতুন বেদনা, নতুন হতাশা? নতুন বেদনা ধারণ করার ক্ষমতা আর আমার নেই।"
কুপুত্র হতেই পারে, কিন্তু কুমাতা তো হয়না, তাইনা ? নিজের সন্তানকে ফেলে দেবার প্রশ্নই তাই উঠে না। নিজের শরীরের রক্ত মাংসের সন্তান থেকে শুরু করে নিজের মানস সন্তান, নিজের একান্ত সুখ দুঃখ যা সন্তান্ততুল্য, যাদের আমরা লালন করি তীব্র কষ্ট কিংবা আনন্দের মাঝে, তাদের কি আমরা ফেলে দিতে পারি ? ফেলে দেওয়া উচিত ?
নিজেকে খুন করে কেউ সুখী হতে পারে কিনা, তার উত্তর অনেক রকম হতে পারে। যখন নিজে বলতে শুধু নিজেকেই বোঝায় না, অস্তিত্বের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে থাকা আরো কাউকে বোঝায়, কারো ছায়াকে বোঝায় যে জড়িয়ে আছে আপন কায়ার সাথে--তখন বোধহয় সেই নিজেকে খুন করে সুখী হওয়া যায় না।
কিন্তু যখন নিজেকে বলতে কোন এক পরাজিত মানুষকে বোঝায়, শ্রান্ত মানুষকে বোঝায়, সে বোধহয় নিজেকে নিজেই হত্যা করার অনুমতিটা পায়। এমন লোকদের বেঁচে থাকাটাই বাহুল্য। পৃথিবী সফলদের জায়গা, ব্যর্থতার কোন স্থান নেই। যত দ্রুত তারা নিজেদের অস্তিত্বকে মুছে ফেলতে পারে, ততোই মঙ্গল। তাদের নিজেদের মঙ্গল, যাদের উপর নির্ভর করে তারা বেঁচে থাকে তাদেরও মঙ্গল।
কালের অতল গর্ভ তার অনাগত দিনে আমাদের জন্য কি রেখে দিয়েছে, তা আমরা কেউ জানি না।হয়ত ভালো কিছু আছে, হয়ত নেই। অন্ধ, যুক্তিহীন আবেগ জীবন চালানোর জন্য যথেষ্ট না। জীবনের প্রতিপদেই আপনার সতর্ক এবং হিসেবী হওয়া উচিত।বেছে নেওয়া উচিত সেই সিদ্ধান্তই যা যোগ্যতার বিচারে অনেক ঊর্ধ্বে। আশার কথা এই যে, সিদ্ধান্তরা আর মানুষ নেই। অযোগ্যতম সিদ্ধান্তটি কখনোই অভিযোগ করতে পারে না আর। সেই সিদ্ধান্তটি বড়জোড় মন খারাপ করতে পারে, কিন্তু তাকে গুরুত্ব দেওয়ার কোন কারন অন্তত আমি দেখছি না। নিজের অযোগ্যতার মাপকাঠিতেই হয়ত সত্যটা একদিন সেই সিদ্ধান্তটি বুঝতে পারবে।
ভাগ্যিস সিদ্ধান্তটি আর মানুষ নেই !!
দীর্ঘ দিন পরে এত ভালো কোন লেখা পড়লাম অন্তর্জালে, তাই দীর্ঘ একটা মন্তব্য করতেই হল। ধৈর্যচ্যুতি হলে ক্ষমাপ্রার্থী।
লেখিকার সর্বাঙ্গীন কুশল কামনা করছি। যেই তথাগত সকলের অশান্তি, ত্রিতাপ দূর করেন বলে শুনেছি, তিনি লেখিকারও মংগল করুন, এই প্রার্থনাই করছি।
hello.
anek din pore likhlen.
abaro apnar lekhae phire asha dekhe bhalo laglo.
sry apanar montobber khatar arektu jaega nicchi.ager montobbe(jodio thik montobbo na)ekta kotha bolte bhule gechhi..nijer jonno plz ektu shomoy berr korun(if possible)..bhalo thakben
এইতো চমৎকার একটা ঝরঝরে লেখা হয়েছে।
দারুণ।
উদ্ধৃতি:
নিজেদের একটা নির্ভার বিকেল পেতে ভয়ঙ্কর লোভ হয়। আবারও তরুণ হতে ইচ্ছে করে।
-এখনো যথেষ্ট তরুণ আছেন। আন্দাজ করছি, অন্তত আমার থেকে।
আপনি কি সচলায়তনে আছেন?
না থাকলে, আমন্ত্রণ আপনাকে সচলায়তনে।
আর নয় এমন দুঃখ -দুঃখ খেলা
এবার হাসিমুখ নিশিদিন সারাবেলা
"তৃতীয়ত, হতাশা। যেরকম ঝরঝরে ছিমছাম গদ্য লিখতে চাই, তা কিছুতেই ধরা দেয় না।"
- এটা কি বিনয়? আদপে আপনার কিন্তু গদ্য লোর হাত খুবই ভাল।
বিনয় মানুষকে বড় করে। সেটা বেশ ভালই জানেন দেখছি :)
একটা নির্ভার বিকেল? হু, হয়তো সম্ভব। কিন্তু আমার যে পুরো একটা নির্ভার জীবনের লোভ হয়। অবশ্য বোকাদের লোভ গুলো এমনই বোকা বোকা হয়!
আর আপনার আশেপাশের অনেক মানুষই এমন বোকা :)
হাহা। কী পাকনাই না ছিলাম।
Post a Comment