তারপর কেটে গ্যাছে সতেরো বছর
আমাদের নরোম কৈশোর
ধূসর বিকেল হয়ে মিশে গ্যাছে সন্ধ্যার ভিতর
তবু মাঝে মাঝে
গভীর শীতের রাতে স্মৃতিচারণ করছি ভেবে
দরজা খুলে এখনও আমি কুয়াশার মাঝে পা বাড়াই
মনে আছে পলি তোর
আমাদের সেই মাট খুঁড়ে জল বের করার অভিযান
আর সেই যে একদিন হঠাৎ কী তুমুল বৃষ্টিতে
দৌড়ে উড়ে তুই আর আমি একটা জামরুল গাছের নিচে
তুই লাফিয়ে লাফিয়ে ডাল ধরে ঝাঁকাতে লাগলি
জামরুল ফুলের ঘ্রাণে ভরে গ্যালো আমার শরীর।
কলেজে উঠে ক্লাস পালানো, উদীচী, মিজান ভাই,
কমরেড ফরহাদ, পথের পাঁচালী, তিথিডোর
কী নরোম হলুদ সেই মফস্বলী দিনগুলো সব
সুগতদা যেদিন বিয়ে করলো
পুরান কলেজের পিছনে সেদিন আমার সেকী কান্না
তুই-ই বা সেদিন অতো কেঁদেছিলি ক্যানো কে জানে
সুগন্ধার ঢেউয়ে ঢেউয়ে কেঁদে গ্যালো করুণ সানাই।
আমার ছেলেটা পড়ে ম্যাপললীফে, তোর মেয়ে ভিকারুননিসায়
সারাদিন অফিসের পর আর হাতে তোর সময় কোথায়
আমারই সময় শুধু, ঘরভরা অনন্ত সময়
স্বর্গের সিঁড়িতে বসে এইরকম জীবনের কথাই কি আমরা ভেবেছিলাম
তোর ন'টা পাঁচটার নির্বোধ কেরানিগিরি
আমার এমন ভালো থাকা।
এখনও জানিস মাঝে মাঝে
ও অফিসে, ছেলে গ্যাছে স্কুলে
ঝমঝমে বৃষ্টির মাঝে আমি যাই সময়ভ্রমণে
তেলের ডিপোর পাশে, সেইখানটায়, সাইরেনদের মতো নদীর বাতাস যেইখানে
আমার শরীর যেন ভরে তোলে মাঘের বৃষ্টির নীল ঘ্রাণে
আমলকি হাতে আমি স্থির শুনি অদ্ভুত সানাই
পাশে স্থির স্তব্ধ আকাশ, পৃথিবীতে আর কেউ নেই কোনোখানে।
অক্টোবর ২৪, ২০০২
আমাদের নরোম কৈশোর
ধূসর বিকেল হয়ে মিশে গ্যাছে সন্ধ্যার ভিতর
তবু মাঝে মাঝে
গভীর শীতের রাতে স্মৃতিচারণ করছি ভেবে
দরজা খুলে এখনও আমি কুয়াশার মাঝে পা বাড়াই
মনে আছে পলি তোর
আমাদের সেই মাট খুঁড়ে জল বের করার অভিযান
আর সেই যে একদিন হঠাৎ কী তুমুল বৃষ্টিতে
দৌড়ে উড়ে তুই আর আমি একটা জামরুল গাছের নিচে
তুই লাফিয়ে লাফিয়ে ডাল ধরে ঝাঁকাতে লাগলি
জামরুল ফুলের ঘ্রাণে ভরে গ্যালো আমার শরীর।
কলেজে উঠে ক্লাস পালানো, উদীচী, মিজান ভাই,
কমরেড ফরহাদ, পথের পাঁচালী, তিথিডোর
কী নরোম হলুদ সেই মফস্বলী দিনগুলো সব
সুগতদা যেদিন বিয়ে করলো
পুরান কলেজের পিছনে সেদিন আমার সেকী কান্না
তুই-ই বা সেদিন অতো কেঁদেছিলি ক্যানো কে জানে
সুগন্ধার ঢেউয়ে ঢেউয়ে কেঁদে গ্যালো করুণ সানাই।
আমার ছেলেটা পড়ে ম্যাপললীফে, তোর মেয়ে ভিকারুননিসায়
সারাদিন অফিসের পর আর হাতে তোর সময় কোথায়
আমারই সময় শুধু, ঘরভরা অনন্ত সময়
স্বর্গের সিঁড়িতে বসে এইরকম জীবনের কথাই কি আমরা ভেবেছিলাম
তোর ন'টা পাঁচটার নির্বোধ কেরানিগিরি
আমার এমন ভালো থাকা।
এখনও জানিস মাঝে মাঝে
ও অফিসে, ছেলে গ্যাছে স্কুলে
ঝমঝমে বৃষ্টির মাঝে আমি যাই সময়ভ্রমণে
তেলের ডিপোর পাশে, সেইখানটায়, সাইরেনদের মতো নদীর বাতাস যেইখানে
আমার শরীর যেন ভরে তোলে মাঘের বৃষ্টির নীল ঘ্রাণে
আমলকি হাতে আমি স্থির শুনি অদ্ভুত সানাই
পাশে স্থির স্তব্ধ আকাশ, পৃথিবীতে আর কেউ নেই কোনোখানে।
অক্টোবর ২৪, ২০০২
5 comments:
Nice poem
ei kobitay kichu jibonander choa achey abar kichuta nostalgic.... sob miliye kobita ta besh valoi
কিছু কি বলার দরকার আছে ?
এই কবিতটা আপনি কেমন লিখেছেন, আপনিই আমার চেয়ে ভালো জানেন।
এরকম কিছুই অদূর ভবিষ্যতে পড়ার আশা রাখি।
অদ্ভুত সুন্দর !!
পড়তে পড়তে কেমন যেন একটা গন্ধ চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। সেই জামরুল ফুলের ঘ্রাণটা কি? হতে পারে...
জামরুল ফুলের গন্ধ আমার অনেক পছন্দ, আমার স্কুলেও একটা জামরুল গাছ ছিলো :)
এই পদ্যটা কলেজে থাকতে ইয়ারলি ম্যাগাজিনে দেবার জন্য লিখেছিলাম, ছাপা হয়নাই।
সেই সময়ে জীবনানন্দের কবিতা পড়ে দারুণ অণুপ্রাণিত ছিলাম এবং এই লেখাতে আসলে ওরিজিনালিটির খুব অভাব আছে, স্পষ্টই জীবনানন্দ দাশের কবিতা থেকে এটি ব্যপকভাবে প্রভাবিত।
লজ্জার সাথে স্বীকার করছি। কবিতা আমার খুব বেশি পড়া হয়ে ওঠেনি। কাজেই কারো প্রভাবিত হয়ে লেখা কী না সেটা বুঝতে পারিনা।
তবে ভাললাগাটাকে আমি সবসময়ই প্রাধাণ্য দেই। সেটা না হয় অন্য কারো থেকে একটু ধার করাই হল। ভালো লাগা কি তাতে খুব বেশি কমে যায়? :)
Post a Comment